Friday, April 29, 2011

কেন আপনি সফট এবং এনার্জি ড্রিংকস খাবেন না


কেন আপনি সফট এবং এনার্জি ড্রিংকস খাবেন না





কারণ আপনি মোটা হতে চান না
মোটা হওয়া মানে শুধু দেখতে খারাপ বা শারীরিক অস্বস্তির ব্যাপারই নয়। ওজন বাড়লে আপনি খুব অনায়াসে যে অসুখগুলোতে আক্রান্ত হবেন তা হলো টাইপ টু ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার,স্ট্রোক, হার্ট এটাক, ক্যান্সার, গলব্লাডারে পাথর, আর্থ্রাইটিস। পরিণামে অকাল মৃত্যু। মোটা হওয়ার সঙ্গে সফট ড্রিংকস-এর একটা সরাসরি যোগাযোগ আছে। বোস্টনের শিশু হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ এবং হার্ভার্ড স্কুল একসাথে গবেষণা করে যা বের করেছে তাহলো, একটি শিশু যদি প্রতিদিন একটা করে বাড়তি সফট ড্রিংকস খায় তাহলে তার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় ৬০%। এক বোতল বা এক ক্যান সফট ড্রিংকসে ক্যালরির পরিমাণ হলো ১৬০ যা ১০ চামচ চিনির সমান। এ পরিমাণ ক্যালরি ঝরাতে সপ্তাহে আপনাকে ভারী ব্যায়াম করতে হবে সাড়ে ৪ ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু আপনি কি তা করেন? তাহলেই বুঝুন পরিণতি!
কারণ আপনি আপনার দাঁত হলুদ বানাতে চান না
ধরুন, আপনি আপনার বন্ধুদের একটা জাদু দেখাতে চান। আপনার ধবধবে সাদা মুক্তোর মতো দাঁতগুলোকে আপনি ১ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ীভাবে হলুদ করে ফেলবেন। কিছুই না, এক ঢোক কোলা মুখে নিয়ে ১ ঘণ্টা ধরে রেখে দিন। ব্যস, এনামেল ক্ষয়ে দাঁতগুলো হলুদ হয়ে যাবে। সফট ড্রিংকসের ঝাঁঝালো স্বাদ বাড়ানোর জন্যে এতে ফসফরিক এসিড ব্যবহার করা হয়। এ এসিড এত শক্তিশালী যে, একটা নখ এর মধ্যে ডুবিয়ে রাখলে ৪ দিন পর আর আপনি নখটাকে খুঁজে পাবেন না। তাছাড়া সফট ড্রিংকসে যে চিনি ব্যবহার করা হয়, ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে এটাও এসিড তৈরি করে।
কারণ আপনি ভঙ্গুর হাড় চান না
ফসফরিক এসিডের আরেকটি কাজ হলো হাড়ের ক্যালসিয়ামকে ক্ষয় করা। ১৯৯৪ সালে টিনএজ মেয়েদের ওপর চালানো হার্ভার্ডের এক গবেষণায় দেখা যায়, যে মেয়েরা সফট ড্রিংকস পান করে অন্যদের তুলনায় তাদের হাড়ভাঙার প্রবণতা ৫ গুণ বেশি। পরবর্তীকালে অস্টিওপরোসিস নামক হাড়ের ক্ষয়জনিত একটি রোগ এদের হতে পারে। এ রোগে হাড়ের ঘনত্ব কমে এবং গঠন দুর্বল হয়ে যায়। ফলে হাড় সহজে ভেঙে যায়। সাধারণত বয়স্ক মহিলাদের এ রোগটি বেশি দেখা দেয় আর আশঙ্কার কথা হলো, ভাঙা হাড় আর সহজে সেরে ওঠে না। ২,৫০০ প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ওপর এ ধরনের আরেকটি গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, এমনকি যারা নিয়মিত দুধ বা অন্যান্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন তারাও কোলাজাতীয় ড্রিংকসের ক্ষতিকর এ প্রভাব থেকে মুক্ত থাকেন নি।
কারণ আপনি আসক্ত হতে চান না
প্রতি বোতল সফট ড্রিংকসে ক্যাফেইন আছে ৫০ মিলিগ্রামের মতো। সফট ড্রিংকস কোম্পানিগুলোর দাবি- এটা তারা ব্যবহার করছে স্বাদ বাড়ানোর জন্যে। কারণ ক্যাফেইনের তেতো স্বাদ অন্যান্য ফ্লেভারকে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু জন হপকিন্স মেডিকেল ইনস্টিটিউটের রোলান্ড গ্রিফিথ বেশ কয়েকজন মানুষকে বাজারের সাধারণ সফট ড্রিংকস এবং ক্যাফেইন ছাড়া ড্রিংকস খেতে দিয়ে দেখেন, ৯২% জনই এ দুটোর পার্থক্য বুঝতে পারে নি। তার মানে ক্যাফেইনের স্বাদের ব্যাপারটি সঠিক নয়। তাহলে ক্যাফেইন দিয়ে কী হয়? ক্যাফেইন আসলে আসক্তি সৃষ্টি করে। আপনি একবার যখন এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন আপনি তখন শুধু এটাই চাইবেন। আর সব আসক্তি সৃষ্টিকারী উপাদানের মতো ক্যাফেইনও সাময়িকভাবে আপনার মুডকে চাঙ্গা করলেও দীর্ঘমেয়াদে এর রয়েছে অনেকগুলো ক্ষতিকর দিক। যেমন, এক বা দুই বোতল সফট ড্রিংকসই আপনার অনিদ্রা, নার্ভাসনেস ও দ্রুত হৃৎস্পন্দন সৃষ্টির জন্যে যথেষ্ট। বেশি পরিমাণে খেলে তা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন থেকে শুরু করে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ প্রবণতা, পেশিতে টান লাগা, অসংলগ্ন কথাবার্তা, বিষণ্নতা এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী মহিলা- যারা সফট ড্রিংকস খেয়েছেন তাদের গর্ভপাত, সময়ের আগেই প্রসব বা কম ওজনের বাচ্চা জন্ম দেয়ার ঝুঁকি বেশি। ক্যাফেইনের আরেকটি প্রভাব হলো, এটা প্রস্রাবের প্রবণতা বাড়ায় এবং দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে। তার মানে প্রখর রোদের মধ্যে সফট ড্রিংকস খেয়ে আপনি হয়তো ভাবছেন- যাক, শরীর থেকে যে ঘাম ঝরে যাচ্ছে তা পূরণ করছেন। আসলে ফল তার উল্টো। তার চেয়ে বরং পানি খান।
কারণ আপনি বদহজমে ভুগতে চান না
আমরা অনেকেই রিচফুড খাওয়ার পর সফট ড্রিংকস খেতে চাই এ ধারণায় যে, এতে খাবার দ্রুত হজম হবে। অথচ এটা যে কত ভুল ধারণা তা একটু বললেই পরিষ্কার হবে। আমাদের দেহ সাধারণত ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খাবার হজম করে থাকে। কিন্তু সফট ড্রিংকস যখন পরিবেশন করা হয়, তখন এর তাপমাত্রা থাকে ৩/৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কাজেই খাবার গ্রহণের পর যখন ঠান্ডা কোমল পানীয় পান করা হয়, তখন হজমে তো সাহায্য করেই না, উল্টো তাতে পচন ধরায়। তাছাড়া এসিডিক হওয়ার কারণে সফট ড্রিংকস পাকস্থলীর সংবেদনশীল এলকালাইন ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে পেট ব্যথা, ফুলে যাওয়া, বদহজম, গ্যাস, টক ঢেকুর ইত্যাদি নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
কারণ আপনি ডায়াবেটিস বাঁধাতে চান না
চিনি এবং ওজনে এর ভূমিকার কারণে সফট ড্রিংকস ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। আমেরিকান ডায়াবেটিক এসোসিয়েশনের ৪ বছর ধরে চলা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে মহিলারা সফট ড্রিংকস বেশি খান, তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সাধারণ মহিলাদের চেয়ে ২ গুণ বেশি।
কারণ আপনি ক্যান্সারের রোগী হতে চান না
সফট ড্রিংকস দেহে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ক্যারামেলের রং আনার জন্যে সফট ড্রিংকসে পলি-ইথিলিন গ্লাইকোল নামে যে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, তা ক্যান্সার সৃষ্টির জন্যে দায়ী। মজার ব্যাপার হলো, ‘ডায়েট কোলা’ নামে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে যে সফট ড্রিংকস বিক্রি হয় তাতে চিনির পরিবর্তে এসপার্টেম নামে একটি কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। দেহের ওপর এ উপাদানটির রয়েছে ৯২ ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব। তার মধ্যে রয়েছে ব্রেন টিউমার, বন্ধ্যাত্ব, ডায়াবেটিস, মৃগী এবং মানসিক ভারসাম্যহীনতা।
কারণ কিডনি ডায়ালাইসিসকে আপনি খুব সুখকর কিছু মনে করেন না
সফট ড্রিংকস যাতে বরফের মতো জমে না যায় সেজন্যে এতে ইথিলিন গ্লাইকোল নামের একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়। এটি প্রায় আর্সেনিকের মতোই একটি বিষ। কিডনির ওপর এর প্রভাব খুব ক্ষতিকর। ১ ঘণ্টায় আপনি যদি ৪ লিটার কোক খান তাহলে কিডনি ফেইলিওর হয়ে আপনার মৃত্যু নিশ্চিত। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন- যারা সফট ড্রিংকস খান না বা পরিমিত খান, তাদের তুলনায় যারা প্রচুর পরিমাণে খান, তাদের কিডনিতে পাথর জমার হার প্রায় তিনগুণ! সফট ড্রিংকসে যে স্যাকারিন ব্যবহার করা হয়, তাতে ইউরিনারি ব্লাডার ক্যান্সার অর্থাৎ মূত্রাশয়ের ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
কারণ আপনি শ্বাসকষ্টে ভুগতে চান না
সফট ড্রিংকসের তাৎক্ষণিক বিপদ হচ্ছে গলা বা শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি। আমাদের নাকে, গলায় তথা শ্বাসতন্ত্রের শুরুর দিকের অংশে থাকে অসংখ্য সিলিয়া। শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত যে ধূলিকণা, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস গ্রহণ করি এই সিলিয়াগুলো সেগুলোকে শরীরের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। সফট ড্রিংক খেলে এসব সিলিয়াগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। শুরু হয় টনসিলাইটিস, ফেরিংজাইটিস, ল্যারিংজাইটিস, ব্রংকাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসজনিত রোগ।
কারণ কীটনাশককে আপনি খাওয়ার জিনিস মনে করেন না
২০০৪ সালে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও ছত্তিশগড় রাজ্যে কৃষকরা কোকাকোলাকে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। এ প্রসঙ্গে অন্ধ্র প্রদেশের রামকৃষ্ণপুরমের চাষী গটু লখমাইয়া বলেন, আমার তুলা চাষের কয়েক হেক্টর জমি জুড়ে আমি সফট ড্রিংকস স্প্রে করেছি। কারণ আমি দেখেছি এতে পোকা মরে যায়। অন্য চাষীরাও বলেছেন, সফট ড্রিংকস প্রচলিত কীটনাশকের তুলনায় দামে যেমন সস্তা, তেমনি ব্যবহারকারীর ত্বকের জন্যেও নিরাপদ।
কারণ আপনি অকালে বুড়িয়ে যেতে চান না
ম্যাসাচুসেটসের ৫০ বছর বয়স্ক একদল নারী-পুরুষ যারা প্রতিদিন ১ ক্যান বা এর বেশি করে সফট ড্রিংকস পান করেছেন, তাদের ওপর ৪ বছর ধরে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের মেটাবলিক সিনড্রোম বেড়ে গেছে ৪৪%। মেটাবলিক সিনড্রোম বাড়লে ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে তেমনি অকালে বুড়িয়ে যায় দেহ।
আর আপনি মুসলিম হলে এটি আপনার জন্যে হালাল না-ও হতে পারে
গবেষক মার্ক পেন্ডারগ্রাস্ট কোকাকোলার ওপর দীর্ঘ গবেষণা করে লিখেছেন দীর্ঘ নামের একটি বই- ফর গড, কান্ট্রি এন্ড কোকাকোলা : ‘দ্য ডেফিনিটিভ হিস্ট্রি অফ দ্য গ্রেট আমেরিকান সফট ড্রিংক এন্ড দ্য কোম্পানি দ্যাট মেকস্ ইট’। এ বইতে তিনি শতাব্দীব্যাপী গোপন করে রাখা কোকের ফরমুলা প্রকাশ করে দিয়েছেন। এ ফরমুলার একটি উপাদান হলো এলকোহল। সুতরাং আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন, তাহলে চিন্তা করে দেখুন আপনি কী খাচ্ছেন আর আপনার সন্তানকেই বা কী খেতে উৎসাহিত করছেন।

আমাদের চট্টগ্রাম: পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হলো যেভা...

আমাদের চট্টগ্রাম: পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হলো যেভা...: "প্রাক-কথন : বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে পাহাড়ী জনগোষ্ঠী শুরু থেকে অংশগ্রহণ করে এসেছে । শেষ দিকে এসে একদিকে হিন্দু ধর্মীয় পুনরুজ্জীবনব..."

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হলো যেভাবে : ইতিহাসের পথ ধরে একটি বিশ্লেষণের চেষ্টা


পার্বত্য চট্টগ্রাম পাকিস্থানে অন্তর্ভুক্ত হলো যেভাবে : ইতিহাসের পথ ধরে একটি বিশ্লেষণের চেষ্টা



প্রাক-কথন :

বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে পাহাড়ী জনগোষ্ঠী শুরু থেকে অংশগ্রহণ করে এসেছে । শেষ দিকে এসে একদিকে হিন্দু ধর্মীয় পুনরুজ্জীবনবাদ প্রভাবান্বিত কংগ্রেসী আন্দোলন এবং অপরদিকে হিন্দু-মুসলিম দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে মুসলিম লীগের পাকিস্থান আন্দোলন দানা বাঁধতে লাগলো । পাহাড়ী জনগনের বেশীরবাগই বৌদ্ধ কিংবা প্রকৃতিপূজারী । তাদের পক্ষে আন্দোলনের এই ধারায় সামিল হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে । সেদিনের জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস, দ্বি-জাতিতত্ত্ববাদী মুসলিম লীগ নেতৃত্ব, অথবা তৎকালীন কম্যুনিস্ট নেতৃত্ব - কেউই এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভাবতে পারেনি ।

১৯১৫ সালে রামমোহন দেওয়ানের নেতৃত্বে চাকমা যুবক সমিতি গড়ে ওঠে এবং ১৯২৮ সালে ঘনশ্যাম দেওয়ানের নেতৃত্বে চাকমা যুবক সংঘ তৈরী হয় । এগুলো তেমন স্থায়ীত্ব পায়নি । তবে ১৯২০ এর দশকে কামিনী মোহন দেওয়ান ও বীরেন্দ্র কিশোর ত্রিপুরার নেতৃত্বে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সমিতি । এই সংগঠনকে ঘিরে পাহাড়ী জনগন বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হলেও তারা মুসলিম লীগ কিংবা কংগ্রেসী ধারার কোনোটির সাথেই যুক্ত হতে পারছিল না । কামিনী মোহন দেওয়ানের সাথে কংগ্রেসী নেতা-কর্মীদের আলাপ- আলোচনা প্রসঙ্গের তাঁর লেখা থেকে আমরা কিছুটা আঁচ করতে পারবো যে সেদিন কী পরিস্থিতি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজ করছিল । তিনি লিখেছেন -

"....... আমি স্বাধীনতার জন্য তোমাদের দলে যোগ দিতে পারি বটে যদি তোমরা আমাকে আরও একটি প্রশ্নের নির্ভুল উত্তর দিতে পারো । তাহা হইলো এই ভাবত স্বাধীন হইলো অর্থে ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু ও মুসলমানেরাই স্বাধীন হইলো বুঝিতে হইবে , কিন্তু সংখ্যালঘু অন্যান্য উপজাতি ও বাঙ্গালী বড়ুয়া প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশেষতঃ আমাদের চাকমা জাতির বেলায় কী নীতি অবলম্বিত হইবে বলিয়া তোমরা মনে কর ? তাহারা বলিল, স্বাধীনতা অর্থে জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে সমান অধিকার লাভে সমর্থ হইবে । ইহাতে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলিয়া থাকিবে না । আমি বলিলাম, ইহা শুনিতে ও বইতে লিখিত বর্ণনা শ্রবণ করিতে শ্রুতিমধুর বটে, কিন্তু বাস্তব জীবনে কতটুকু কার্যকরী হয়, ইহা চিন্তা করিয়া দেখিবার বিষয় । আমি ইহাও বলিলাম, মনে করো তোমার পরিবারে শিশু-যুবা-বৃদ্ধ প্রভৃতি বিভিন্ন বয়সের লোক আছে । বাড়ির কর্তা যদি শিশু ও যুবাকে সমান অবস্থায় থাকিবার ব্যবস্থা করেন, তবে পক্ষপাত দোষ হইলো না বটে, তবে তখন শিশুদের অবস্থা কী হইবে বলিয়া মনে হয় ? মনে কর দৌড় প্রতিযোগিতায় বালক, বৃদ্ধ, যুবা প্রভ্বতি সকলকে একসঙ্গে অংশগ্রহনে বাধ্য করিলে ইহার পরিস্থিতি কী দাঁড়াইতে পারে তাহা ভাবিয়া দেখিবার বিষয় । আমরা হিন্দু-মুসলমান সভ্যতা গর্বে গর্বিত জাতির তুলনায় নাবালক শিশুমাত্র । আরও একটি বিষয় ভাবিয়া দেখিতে হয়, একদিন আমরা স্বাধীন ছিলাম । এখনও প্রায় অর্ধেক সায়ত্বশাসনের সুবিধা ভোগ করিয়া আসিতেছি । জাতীয় মোকর্দমাদি আমরা নিজেরা নিষ্পত্তি করিয়া থাকি । স্বাধীনভাবে যে কোন স্থানে স্থানান্তর ক্রমে বসবাস করিয়া থাকি । এই জন্য কোন জায়গা খরিদ বা বন্দোবস্ত গ্রহণ করিতে হয় না । পারিবারিক ব্যবহারের জন্য যে কোন বনজ সম্পদ বিনা বাঁধায় ব্যবহার করিতে পারি- ইত্যাদি বহুবিধ সুবিধা , একই আইন বা নিয়মের অধীন থাকিতে হইলে এইসব সুবিধা হইতে বঞ্চিত হইয়া পাহাড়ীরা কদাপি আত্মরক্ষা করিয়া বাঁচিয়া থাকিতে পারিবে না । যেমন সভ্য জাতির সঙ্গে সংমিশ্রনে পৃথিবীর বহু উপজাতি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে ।........তাহারা বলিল, নেতৃস্থানীয় লোক ভিন্ন ইহার বিষয়ে সঠিক উত্তর প্রদান সম্ভব নহে ।

বহু শীর্ষস্থানীয় নেতার মধ্যে ভারতের শীর্ষস্থানীয় নেতা হিসাবে মহাত্মা গান্ধীকে মানিয়া লইতে বোধহয় কাহারো আপত্তি থাকিবে না । ........বোম্বে পৌছাইয়া গামদেবী রোড নামক রাস্তায় এক প্রকান্ড অট্টালিকায় তাহার সহিত দেখা করতঃ উক্ত প্রশ্নসমূহ জিজ্ঞাসা করিলাম । তিনি একটি উত্তরেই তৎক্ষনাৎ সর্ব প্রশ্নের উত্তর দিলেন । তিনি বলিলেন- " গণতান্ত্রিক রাস্ট্রের নিয়মে জনগন যেই প্রকার শাসন চাহে, তাহাই পাইবে ।".....

".....বৃটিশ গভর্নমেন্ট জনতার অনমনীয় প্রেরণা অস্ত্রবলে গতিরোধ করিবার সম্ভাবনা না দেখিয়া তাহার চিরাচরিত নীতি ও স্বভাব মতে ভারতে হিন্দু-মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতির অঙ্গে পরস্পরের মধ্যে সন্দেহ ও বিদ্বেষের বীজ বপন করিয়া অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতকে স্বাধীনতা প্রদানের কথা ঘোষনা করিল । এই ঘোষনার বাণী শুনিয়া এই পার্বত্য জাতিদের মনেও এক নতুন চিন্তা ও নতুন প্রেরণার ভাব জাগিয়া উঠিল । ভারত স্বাধীনতা লাভ করিলে আমরা হিন্দু-মুসলমান দুই সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতির অধীনে থাকিয়া, স্বীয় জাতির স্বাতন্ত্র রক্ষা করার সম্ভাবনা আছে কিনা তদ্বিষয়ে চিন্তা করিয়া কর্তব্য নির্ধারন করিবার সময় উপস্থিত হইলো । কাল প্রভাবে আমরা নগন্য সংখ্যায় পর্যবসি্ত হইলেও এক সময় আমরাও স্বাধীন ছিলাম । অতএব এই সুযোগে আমাদের পূর্ব গৌরব ও সংস্কৃতি রক্ষাকল্পে কিছুটা সায়ত্বশাসন লাভে সচেস্ট হওয়া প্রয়োজন । কিন্ু কী প্রকারের সায়ত্বশাসন আমাদের উপযোগী হইবে - ইহা লইয়া আমাদের মধ্যে তিন শ্রেণীর লোকের আবির্ভাব দেখা দিল ।

চীফেরা চাহেন রাজতন্ত্র প্রথানুরুপ শাসনপদ্ধতি । জনসমিতির এক পক্ষের লোক (স্নেহকুমার চাকমার পক্ষীয়) চাহেন জনগন কতৃক শাসন ক্ষমতার অধিকার লাভ । আমি ও আমার দলীয় লোকেরা চাই, সমাজের নেতা কিংবা রাজা হিসাবে এই পদকে নির্বিঘ্ন ও স্থায়ী করিবার জন্য এমন এক শাসন নীতি প্রবর্তন আবশ্যক, চীফ বা রাজারুপে যিনি থাকিবেন, তিনি সকলের শিরোমনি গণ্য হইয়াও স্বীয় খেয়ালের বশে কিংবা স্বার্থসুবিধার খাতিরে ইচ্ছে করিলেও যেন প্রজার ক্ষতি কিংবা উন্নতির বিঘ্ন করিবার উপায় না থাকে । "

এই লেখা থেকে দেখা যায়, প্রধান দুই ধর্মাবলম্বী হিন্দু ও মুসলিম জনসংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারত বিভক্তিতে তাদের অংশগ্রহণ যেমন ছিল দুরূহ, তেমনি নিজেদের কর্মপন্থা নিয়েও তারা ছিল বিভক্ত । ১৯৪৬ সালের শেষ দিকে সাম্প্রদায়িকতার জোয়ার যখন তুঙ্গে এবং দেশ ভাগাভাগির দেন দরবারে কংগ্রেস-মুসলিম লীগ ব্যস্ত তখন জাতীয় কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে সরেজমিনে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার জন্য কংগ্রেস নেতা এ.ভি. ঠক্করের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাঙ্গামাটি এসেছিলেন । ঐ আলোচনা সে মুহূর্তে পার্বত্য জনগনের কাছে ভারত কিংবা পাকিস্থান কোন অংশের সাথে তাদের ভাগ্য জড়িত হবে- এর বাইরে যাওয়া সম্ভব ছিল না । পাকিস্থানের চে ভারতের সাথে অন্তর্ভুক্তিতেই তারা আগ্রহী হবে - সেটাই স্বাভাবিক । কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব তাদের সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ হন ।

অন্যদিকে তিনটি সার্কেলের রাজারা (শাসনকাজের সুবিধার জন্য বৃটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে ঃ চাকমা। বোমাং ও মং । প্রতিটি সার্কেলে একজন রাজা নিযুক্ত হন । এটি করা হয় ১৮৬০ সালে । ) বৃটিশ , কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের কাছে ধর্ণা দিয়ে দেশীয় রাজ্যের মর্যাদা ও তাদের প্রথাগত রাজকীয় ব্যবস্থা ভাল রাখার দাবী করেছিলেন । সেখানে তেমন সাড়া না পেয়ে পরবর্তীতে তিন সার্কেল, ত্রিপুরা, কুচবিহার ও খাসিয়া রাজ্যকে নিয়ে কেন্দ্র শাসিত কনফেডারেশন গঠনের প্রস্তাব রাখেন । সেটাও ব্যর্থ হলে ১৯৪৬ সালে চাকমা রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় পাহাড়ী সমিতি(hillman association) গড়ে ওঠে । সমিতির উদ্দেশ্য ছিল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হওয়া ও রাজন্য ব্যবস্থা বলবৎ রাখার জন্য তদবির করা ।

এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে ভারত ভাগ হয় । ভারতবর্ষ ও পাকিস্থান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে ।

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান , পারলে ঘুরে আসুন


কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান , পারলে ঘুরে আসুন

সমুদ্র সৈকত :
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১২০ কি:মি: সৃষ্টিকর্তা যেন রূপসী বাংলার সব রূপ ঢেলে দিয়েছে বালুর আঁচলে। সুর্য্যস্নান কিংবা সমুদ্রস্নানে নিজেকে বিলীন করে দিন নীলাভ প্রকৃতিতে। খোলা জীপে, স্পীড বোটে বা ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো আর সমুদ্রের বালির বিছানায় দাঁড়িয়ে শামুক-ঝিনুকের সাথে লোকোচুরি খেলতে খেলতে উপভোগ করুন সূর্যাস্তের অনাবিল আনন্দ। কক্সবাজারের নাজিরার টেক থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত উক্ত বীচ। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে উক্ত বীচ অবস্থিত। এর মধ্যে লাবনী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, ডায়বেটিক হাসপাতাল পয়েন্টসহ আরো কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখযোগ্য।
হিমছড়ি:
কক্সবাজার হতে প্রায় দশ কি:মি: দক্ষিণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেযর লীলাভূমি হিমছড়ী। হিমছড়ি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা রয়েছে। কক্সবাজার শহর হতে মেরিন ড্রাইভ সড়কে সমুদ্র আর পাহাড়ের মধ্যদিয়ে প্রাণচঞ্চলতায় জীপে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে অনায়াসে বেড়িয়ে আসুন ঝর্ণাধারা প্রবাহমান হিমছড়ি। সেখানে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উদ্যোগে একটি পিকনিক স্পট তৈরী করা হয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক সেখানে ভ্রমন করে সাগর ও পাহাড়ের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
রাডার ষ্টেশন:
হিলটপ সার্কিট হাউসের দক্ষিণ পাশের চূঁড়ায় কক্সবাজার রাডার ষ্টেশনের অবস্থান। এখান থেকেই দেশব্যাপী ঝড়ঝাঞ্জা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়। রাডার যন্ত্রটি সুইডিশ শিশুকল্যাণ সংস্থা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় ১৯৬৮ সালে স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় তা অাধুনিকীকরণ করাহয়।
বদর মোকাম:
বদর মোকাম মসজিদটি শহরের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ। স্থানীয়ভাবে জনশ্রুতি আছে পীর বদরশাহ’র নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে। বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ তীরে কক্সবাজার সদর থানার পার্শ্বে মসজিদটি অবস্থিত।
হিলটপ সার্কিট হাউস :
জেলা পরিষদ ভবনের পশ্চিম দক্ষিণে পাহাড়ের চুঁড়ায় মনোরম পরিবেশে হিলটপ সার্কিট হাউসের অবস্থান। অল্পক্ষণের জন্য হলেও ভারতের দার্জিলিং এর মত মনে হবে। এর চূঁড়া থেকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ ও পর্যটন নগরীর টপভিউ অবলোকন করা সম্ভব।
লাইট হাউস:
রাডার ষ্টেশনের দক্ষিণে অপর একটি পাহাড়ের চূঁড়ায় এর অবস্থান। লাইট হাউসের মাধ্যমেগভীর সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান দিক নির্দেশনা পায়। অর্থাৎ রাতের অন্ধকারে গভীর সমুদ্র থেকে যে দিকে লাইট দেখাযায় সে দিককে কক্সবাজার উপকূল হিসেবে ধরে যার যার অবস্থান ও গন্তব্য নির্ণয় করে নৌযান সমুহ চলাফেরা করে।
প্রাচীন ঐতিহ্য:
১৬০০-১৭০০ খৃষ্টাব্দে শাহ সুজার আমলে একটি মসজিদ তৈরী হয়েছিল। এটি চৌধুরী পাড়া মসজিদ বা আজগবি মসজিদ নামে পরিচিত। এটি কক্সবাজার সদরের বি.ডি.আর ক্যাম্পের উত্তর দিকে অবস্থিত।
হ্যাচারী জোন:
আনবিক শক্তি কমিশন থেকে দক্ষিণে কলাতলী হ্যাচারী (চিংড়ী পোনা উৎপাদন ও বিক্রয় কেন্দ্র) জোনের অবস্থান। গভীর সমুদ্র থেকে মা চিংড়ি (মাদার চিংড়ি) সংগ্রহ করে নার্সিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে বাচ্চা (পোনা) উৎপাদন ও বাজারজাত করে। এখান থেকে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় হয়। জোনে প্রবেশের সাথে সাথেমনে হবে সড়কের দু’পাশে ঝাউবন দাঁড়িয়ে যেন আপনাকে অভ্যর্থনা করছে।
কক্সবাজার হ্যাচারী:
প্রধান সড়ক হতে পশ্চিমে পুরানো সমুদ্র সৈকতের রাস্তার উত্তর দিকে গেলেই সরকারি চিংড়ি প্রজনন কেন্দ্রটি অবস্থিত। এখানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চিংড়ি পোনা উৎপাদিত হয়।
প্যাগোড়া (জাদী):
১৭৯০ ইংরেজী সালের দিকে বার্মিজরা আরাকান বিজয়ের পর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় রাখাইন সম্প্রদায় এটি নির্মাণ করে। তারা এটিকে স্মৃতিচিহ্ন বলে। কক্সবাজার সদর, রামু ও টেকনাফের পাহাড় বা উচুঁ টিলায় এ ধরনের প্যাগোড়া দেখা যায়।
বিমান বন্দর:
প্রধান সড়ক হতে উত্তরে মহিলা কলেজের (বিমান বন্দর সড়ক) পথ দিয়ে কক্সবাজার বিমান বন্দর যাবেন। ছোট বিমান বন্দর হলেও এখানে বিমানের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চিংড়িপোনা বহনকারী বিদেশী বিমান অবস্থান করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিমান যোগে দেশী বিদেশী পর্যটকগন অনায়াসেই কক্সবাজার বেড়াতে আসতে পারেন। তাছাড়া সাদা সোনা নামক খ্যাত চিংড়ী পোনা কক্সবাজার থেকে কার্গো বিমান করে যশোর হতে খুলনা-সাতক্ষীরা নেওয়া হয়।
অগ্গ মেধা বৌদ্ধ ক্যাং:
কক্সবাজার সদরে ছোট বড় মিলিয়ে ৭টিরও বেশী বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। আগ্গা মেধা ক্যাং ও মাহাসিংদোগীক্যাং সবচেয়ে বড়। এ সবে স্থাপিত বৌদ্ধ মুর্তিগুলো দেখবার মতো। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা ও বিষু উৎসব ক্যাং এ উদযাপন হয়।
শুটকী রপ্তানী ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা:
পুরো এলাকা জুড়ে বেশ কয়েকটি শুটকী রপ্তানী ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঘুরে দেখে আসুন কিভাবে শুটকী প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হচ্ছে।
শুটকী মহাল (জিরো পয়েন্ট):
এখানে বঙ্গোপসারে থেকে আহরিত মৎসকে প্রাকৃতিক উপায়ে শুকানো হয়। স্থানটি নাজিরার টেক নামে পরিচিত এবং এটি কক্সবাজারের জিরো পয়েন্ট।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র:
বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত মৎস্য এখানেই নামানো হয়। এখান থেকেই দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বা প্রসেসিং সেন্টারে মাছ সরবরাহ হয়। এটি ফিসারীজ ঘাট নামেও পরিচিত। বাঁকখালী নদীর তীরে অবস্থিত উক্ত স্থানটি কক্সবাজারের মাছের প্রধান আড়ত।
লবণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা:
ইসলামপুর, নাপিতখালী এলাকা থেকে বাংলাদেশের চাহিদার ৮৫% লবণ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপনন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নামকরা লবণ বিক্রয় ও বিপনন প্রতিষ্ঠান গুলো এখান থেকেই লবণ সংগ্রহ করে। কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কি:মি: দূরে এর অবস্থান। টেক্সী কিংবা মাইক্রোবাস যোগে বেড়ায়ে আসা যাবে। তা’ছাড়া চট্টগ্রামগামী বাসে চড়ে ইসলামপুর ষ্টেশনে নেমেও যাওয়া যাবে।
বার্মিজ মার্কেট:
রাখাইন রমনীদের পরিচালিত বিভিন্ন রকম হস্তশিল্প ও মনোহরী দ্রব্যাদির দোকান। এ সব দোকান /মার্কেটের অবস্থান বেশীর ভাগই পূর্ব বাজারঘাটার দিকে।
ঝিনুক মার্কেট:
ঝিনুক শিল্পের রকমারি জিনিসপত্রের প্রধান বিক্রয় ও বিপনন কেন্দ্র। এর অবস্থান প্রধান সড়কে হোটেল হলিডের মোডের পশ্চিমে। ঝিনুক শিল্পের যাবতীয় কারুকার্য খন্ডিত জিনিসপত্র এখানে পাওয়া যায়। সমুদ্র সৈকতেও শামুক ঝিনুকের আরো অনেক বিক্রয় ও বিপনন কেন্দ্র রয়েছে।
শাহ ওমর শাহ (রা)- এর দরগাহ:
কাকারা ইউনিয়নে একটি নাম করা দরগাহ এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান রয়েছে। এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকের সমাগম ঘটে। এ’ছাড়া কাকারায় প্রতি বছর একটি ঐতিহাসিক ঘোড় দৌঁড়ের মেলাও অনুষ্ঠিত হয়। কাকারার পাশে মানিকপুর ‘মহিষের দই’ এর জন্য বিখ্যাত।
গোলাপ চাষ প্রকল্প:
প্রায় ৫০ একর জায়গা জুড়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গোলাপ ফুলের চাষ করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়হয়। গোলাপ বাগানে বেড়িয়ে আসুন ফুলের সৌরভে। উক্ত ফুলের বাগানটি চকরিয়াউপজেলার হারবাং এলাকায় অবস্থিত। এখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য স্থানে রপ্তানী হয়।
দুলাহাজরা সাফারী পার্ক:
সাফারী পার্ক হলো সরকার ঘোষিত এলাকা যেখানে বণ্যপ্রানীদেরকে তাদের প্রাকৃতিক …… প্রতিপালন করা হয়। এর মধ্যে দেশী-বিদেশী বন্য প্রাণীর বংশবৃদ্ধি ও অবাধ বিচরণের সুযোগ থাকে এবং যাতে পর্যটকগণ পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে ভ্রমণ রে টিকিটের বিনিময়ে শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ থাকে। সাফারী পার্ক চিড়িয়াখানা থেকে ভিন্নতর। চিড়িয়াখানায় জীব-জন্তু আবদ্ধ অবস্থায় থাকে আর সাফারী পার্কে মুক্ত অবস্থায় বিচরণ করে। এর আয়তন ৯০০ হেক্টর। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্বে ডুলাহাজারা রিজার্ভ ফেরেষ্টে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিতবনাঞ্চলে সাফারী পার্কটি অবস্থিত। কক্সবাজার জেলা সদর হতে উত্তরে পার্কটিরদূরত্ব ৫০ কি:মি: এবং চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১০ কি:মি:। জেলা সদর হতে সাফারী পার্কে পর্যটকদের যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ভূতাত্ত্বিকভাবে এ অঞ্চল টারসিয়ারি পিরিয়ডের প্লিওসিন যুগের অন্তর্ভূক্ত যা ২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে গঠিত হয়েছে। এটি ডুপিটিলা সিরিজের অন্তর্গত যা সেন্ডস্টোন, সিল্টস্টোন ও স্যালন দ্বারা গঠিত।প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত নির্জন উঁচুনিচু টিলা, প্রবাহমান ছড়া, হ্রদ, বিচিত্র গর্জন এর মত সু-উচ্চ ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক বৃক্ষ চিরসবুজ বনের জানা-অজানা গাছ-গাছালি, ফল-ভেষজ উদ্ভিদ, লতার অপূর্ব উদ্ভিদ রাজির সমাহার ও ঘন আচ্ছাদনে গড়ে উঠেছে সাফারী পার্ক। চারদিকে বেষ্টনী রয়েছে যাতে বন্যপ্রানী পার্কের বাইরে যেতে না পারে। পার্কের ভিতরে আভ্যন্তরীন বেষ্টনীও রয়েছে। আভ্যন্তরীন বেষ্টনীর ভিতরে বাঘ, সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণী প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবাস করে।
সাফারী পার্ক সম্পর্কে অতি অল্প সময়ে এক পলকে এর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ধারনার জন্য রয়েছে প্রধান ফটকের বাম পাশে ডিসপ্লে ম্যাপ। পর্যটকদের পার্কের ভিতরে অনায়াসে বাঘ-সিংহসহ অন্যান্য প্রাণী পর্যবেক্ষণ করার জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, প্রহরা পোষ্ট রয়েছে।
প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র:
সাফারী পার্কের অভ্যন্তরেই স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের প্রায় সবধরণের বনাঞ্চলের গাছপালা, বন্যপ্রাণীর মডেল, মুরাল ও ষ্টাফিং করে আলো ও শব্দ প্রবাহের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চল সম্পর্কে দর্শকদের সম্যক ধারণাদেয়া হয়। এখানে প্রায় ১০০ ধরণের বন্যপ্রাণী ও অসংখ্য গাছপালারমডেল মুরাল তৈরী করা হয়েছে। প্রায় ২৫ মিনিটের দীর্ঘ স্বব্যখ্যায়িত অডিও-ভিস্যুয়াল প্রোগ্রামের মাধ্যমে দর্শকগণ আনন্দ লাভ করবেন।
প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে:
বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, নীলগাই, জেব্রা, জিরাফ, সাম্বার হরিণ, বাঁশভালুক, বন্যশুকর, চিত্রা ও মায়াহরিণ, প্যারাহরিণ, অজগর, বনমোরগ, গয়াল, বিভিন্ন প্রজাতির বিড়াল, বিভিন্ন প্রজাতির বানর, ভারতীয় বনরুই, সজারু, স্প্রংবক, কুদু, উল্লুক, খেঁকশিয়াল, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী, বড়বেজী, সাপের বিভিন্ন প্রজাতি, মিঠা পানির কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বিভিন্ন প্রজাতির কাছিম, হাজারো রকমের বিরল গাছপালা আরো অনেক প্রাকৃতিক জীবজন্তু।
কৃত্রিম হ্রদ:
ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর পানীয় জলের জন্য ২টি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। কৃত্রিম হ্রদের পাশদিয়ে হাতির পিঠে চড়া আপনাকে অন্যরকম আনন্দে ভাসিয়ে তুলবে। আরো দেখেতে পাবেন।
অসংখ্য অতিথি পাখি ও জলজ পাখি। প্রাকৃতিক লীলাভূমি বঙ্গোপসাগর বিধৌত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক কার্পেট বিচানো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসা পর্যটকগন সাফারীপার্ক পরিদর্শন করে নির্মল আনন্দ লাভ করা ছাড়াও প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে বেশকিছু সময় বন্য পরিবেশে থাকার সুযোগ পাবেন।
মিউজিয়ামে রয়েছে:
অজগর সাপের চামড়া, উড়ন্ত কাঠ বিড়ারীর চামড়া, হরিণের চামড়া, বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মান আমাদের প্রয়োজন। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম’ স্থাপন করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম। এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের পূর্ব পার্শে ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের প্রবেশ গেটের পাশে অবস্থিত।
ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম:
বাংলাদেশের বনাঞ্চল বন্যপ্রাণীর সমারোহ সমৃদ্ধ। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্র হরিণ, মায়া হরিণ, হাতি, বানর, সজারু, হনুমান, ভাল্লুক, কুমির,ময়না, টিয়া, পেঁচা, মাছরাঙ্গা, সাপ, কচ্ছপ প্রভৃতি বিরল বন্যপ্রাণী বিচরণে বাংলার বনাঞ্চল ও প্রকৃতি মুখরিত।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাড়তি চাহিদা মিটাতে গিয়ে অনেক বনাঞ্চল রূপান্তরিত হয়েছে ঘরবাড়ী ও কৃষি জমিতে। কোথাও বনাঞ্চলে গড়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, শিল্প-কারখানা, হাট-বাজার ও শহর-বন্দর। এমনি পরিস্থিতিতে আবাসস্থলে ধ্বংস হয়ে গ্রামীণ ও পাহাড়ী বন জংগল হতে অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রাকৃতিক বনাঞ্চলেও বন্যপ্রাণী আশংকাজনকভাবে কমে গেছে।
১৯৬০ সনে কক্সবাজারের বনাঞ্চল হতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মিঠাপানির কুমির সুন্দরবন হতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বন্যপ্রাণী আমাদের পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান ও ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মান আমাদের প্রয়োজন। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি,শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম’ স্থাপন করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম। এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের পূর্ব পার্শে ডুলাহাজারা সাফারী পার্কের গেটের পাশে অবস্থিত।
পরিদর্শন ফি:
১। প্রাপ্ত বয়স্ক (১৫ বৎসরের উর্ধে): ১০/=
২। ছাত্র-ছাত্রী (১৫ বৎসরের নীচে): ৫/=
৩। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ: (৩০-১০০জন) ১০০/=
৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ: (১০০জনের উর্ধে) ২০০/=
৫। বিদেশী পর্যটক: ৪ ইউ এস ডলারের সমপরিমাণ বাংলাদেশী টাকা।
৬। মিনিবাসে পরিভ্রমণ: ২০/=
৭। প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন: ১০/=
৮। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম পরিদর্শন: ৫/=
৯। ব্যক্তিগত পরিবহনে পার্ক পরিদর্শন: ৫০/=
১০। গাড়ী পার্কিং ফি: ক) বাস প্রতিটি- ২৫/=
খ) কার/ মাইক্রোবাস-১৫/=
পরিদর্শনের সময় সূচী:
প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
রামকোট তীর্থধাম:
এটি রামকোট বনাশ্রমের পার্শ্বের পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। ৯০১ বাংলা সনে স্থাপিত। কথিত আছে রাম-সীতা বনবাস কালে এই রামকোটে অবস্থান করেছিল। তীর্থধামে মন্দিরের পাশাপাশি আলাদা একটি বৌদ্ধ বিহারে ধ্যানমগ্ন ছোট একটি বৌদ্ধমূর্তিও রয়েছে। জনশ্রুতি আছে, দু’টি ধর্ম পাশাপাশি শান্তিতেসহাবস্থানের প্রমাণ স্বরূপ সম্রাট অশোকের সময়ে এইমূর্তি স্থাপিত হয়।
ছেংখাইব ক্যাং:
রামুর শ্রীকুলস্থ বাঁকখালী নদীর তীরে ছেংখাইব ক্যাং (বৌদ্ধ বিহার টি) অবস্থিত। এ বৌদ্ধ বিহারে নানা রকম নক্সা খচিত আসন ও কাঁচের পাত্রে সংরক্ষিত ১০টিরও বেশী পিতল এবং আরো অনেক শ্বেত পাথরের মূর্তি শোভা পাচ্ছে। সব মিলে রামু থানায় ২৩টি বৌদ্ধ বিহারে শতাধিক মূল্যবান বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।
আধাঁর মানিক:
রামু থানার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নে উখিয়ার ঘোনায় একটি রহস্যময় গর্ত আছে। যার শেষ কোথায় কেউ জানে না। তাই একে কেন্দ্র করে জন্ম নিয়েছে অনেক কিংবদন্তী। স্থানীয় জনগণ একে ‘অাঁধার মানিক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার:
ফতেখাঁর কুল ইউনিয়নে লামার পাড়া গ্রামে অপূর্ব সৌন্দর্য্য মন্ডিত বৌদ্ধ বিহারটি অবস্থিত। এ ক্যাং এ পিতল নির্মিত বৌদ্ধ মূর্তিটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি। এত কারুকার্য খচিত বৌদ্ধ বিহার কক্সবাজার জেলায় আর কোথাও নেই।
রামকোট:
রামু থানার রাজারকুল ইউনিয়নে পাহাড়ের চুঁড়ায় রামকোট বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। মন্দিরটি ২০০০ বৎসর পূর্বে (খৃ:পূ: ৩০৮) নির্মিত হয়। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক অস্ত্র ত্যাগ করে হিন্দু ধর্মথেকে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়ে মুর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। রামকোট বনাশ্রমেছোট বড় আরো অনেক বৌদ্ধমূর্তিরয়েছে। রামু চৌমুহনী থেকে রামকোট বনাশ্রমেরিক্সায় যাওয়া যায়।
রাবার বাগান:
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের মধ্যে রামু রাবার বাগান ভিন্ন আমেজের অপরূপ দর্শনীয় স্থান। ২৮,৮৮৬ একর জায়গার উপর বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থার পরিকল্পনায় স্থাপিত কক্সবাজার জেলা তথা বাংলাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ রাবার বাগান। বেড়িয়ে আসুন প্রকৃতির সাথে মিতালি করে।
নাইক্ষ্যংছড়ি লেক ও ঝুলন্ত ব্রীজ:
এটি একটি প্রাকৃতিক জলাশয়। পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপূর্ব সমাহার। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মত দর্শনীয় স্থান। এখানে রয়েছে একটি ঝুলন্ত ব্রীজ। এর উপর দিয়ে লেকের এপাড় ওপড় যাওয়া যায়। কক্সবাজার শহর হতে সরাসরি গাড়ি যোগে নাইক্ষ্যংছড়ি যাওয়া যায় এবং দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায়। কক্সবাজার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূরত্ব ২৮ কি:মি:।
আইসোলেটেড নারিকেল বাগান:
রামু চৌমুহনী হতে দক্ষিণে ৫ কি:মি: দুরে রাজারকুলের পাহাড়ে মনোরম পরিবেশে ২৫০ একর জায়গায় এটি অবস্থিত। বাগানটি ‘এ’ এবং ‘বি’ ব্লকে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ব্লকে ৪টি করে সাব ব্লক রয়েছে। বাগানে নারিকেল গাছের সংখ্যা প্রায় ৯,১১২টি।
ইনানী:
পাথর আর নীল জলরাশির অাঁচল বিছানো ইনানীর সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের গর্জন, পাখীর কাকলী আর পাহাড়ী ঝর্ণার ধ্বনির অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে এখানে। সুপারী গাছেল ছায়াঘেরা ইনানীতে যেতে হলে কক্সবাজার থেকে উখিয়া কোটবাজার হয়ে জীপে পশ্চিমে প্রায় তিন মাইল গেলেই ইনানী সৈকত। এতে বন বিভাগের একটি সুন্দর ডাক বাংলো রয়েছে। কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব ৩৩ কি:মি:। এখানে ‘ইনানী বীচ রিসোর্ট’ নামে একটি অবসর যাপন কেন্দ্র রয়েছে। ইচ্ছে করলে সেখানে রাত্রি যাপন করতে পারেন।
কানা রাজার সুড়ংগ:
উখিয়া থানার জালিয়া পালং ইউনিয়নে পাটুয়ার টেক সৈকতের কাছে নিদানিয়া পাহাড়ের মধ্যে এ সুড়ংগ বা গর্ত। সুড়ংগের ব্যাস ১২ও ১২ একটা বড় ট্রাক অনায়াসে সুড়ংগ পথে প্রবেশকরতে পারবে। কথিত আছে, জনৈক মগ সম্প্রদায়ের কানা রাজার (এক চোখ অন্ধ) শাসন আমলে আত্মরক্ষার জন্যে এই সুড়ংগ নির্মান করেছিল।
মাথিনের কূপ:
উপন্যাসিক ধীরাজ ভট্টাচার্য উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে এস.আই. হিসাবে টেকনাফ থানায় বদলী হয়ে এসেছিলেন। তখন টেকনাফের নাম করা রাখাইন জমিদার ওয়াংথিনের একমাত্র আদুরে কন্য মাথিন থানার সামনের কুয়া থেকে নিয়মিত পানি নিতে আসতো। সকাল বিকাল পানি নিতে আসা ছিল মাথিনের সখ। পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিদিন থানার বারান্দায় বসে বসে অপূর্ব সুন্দরী মাথিনের পানি নিতে আসা যাওয়া দেখতেন। আস্তেআস্তে ধীরাজ ভট্টাচার্যের সংগে মাথিনের চোখা চোখি এবং পরে তা’ প্রেমে পরিণত হয়।
বিয়ে করতে ব্যর্থ হলে, মাথিন বিচ্ছেদের জ্বালায় তিলে তিলে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করে। মাথিনের অতৃপ্ত প্রেমের ইতিহাসের নীরব সাক্ষী মাথিনের কুপ। টেকনাফ থানা প্রাঙ্গনে একুপের অবস্থান। বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল কুদ্দুস রানা ১৯৯৪ সালে বাঁশের তৈরী কূপটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে জেলা পরিষদ থেকে এদিকে সংস্কার করা হয়। এখন কূপটি দেখতে খুবই আকর্ষনীয়। সেখানে প্রেমের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও লেখা রয়েছে। ইদানীং উল্লিখিত কাহিনী অবলম্বনে স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচিত্রও নির্মিত হয়েছে।
বৌদ্ধ ক্যাং:
টেকনাফ উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ১০টি বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মূর্তিটি ন্যা-থং পাহাড়ের ক্যাং-এ রয়েছে। বৌদ্ধ মূর্তিটির আকার আয়তন ও শৈল্পিক বৈশিষ্ট অন্যান্য গুলোর চেয়ে অনেক উন্নত।
নাফ নদীর দৃশ্য:
টেকনাফ শহরে প্রবেশের পূর্ব মুহুর্তে বি.ডি.আর চেকপোষ্টের পরে পাহাড়ের চূঁড়া থেকে নাফ নদীর দৃশ্য খুবই সুন্দর দেখায়। নাফ নদীর অপর পাড়ে বার্মা (মিয়ানমার) সীমান্ত খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায়।
স্থল বন্দর:
এ বন্দর দিয়ে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন ও বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্য সামগ্রী ওসৌখিন সামগ্রী আমদানী ও রপ্তানী হয়। পর্যটকগন টেকনাফ কিংবা সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে এ বন্দর পরিদর্শন করতে পারেন।
শাহপরীর দ্বীপ:
সাবরাং ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। পূর্বে এটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছিল,কালক্রমে মূল ভূখন্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। উপজেলা সদর এর দূরত্ব প্রায় ১০ মাইল। এর নামকরন সম্পর্কে কেউ বলেন শাহ সুজারস্ত্রী পরীবানু ও শাহ সুজার ‘শাহ’ শব্দ যুক্ত হয়ে শাহপরী হয়েছে, কারো মতে ‘শাহ ফরিদ’ আউলিয়ার নামে দ্বীপের নাম করণ হয়েছে। অপরদিকে অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি সা’বারিদ খাঁ’র ‘হানিফা ও কয়রাপরী’ কাব্য গ্রন্থের অন্যতম চরিত্র ‘শাহপরী’। রোখাম রাজ্যের রাণী কয়রাপরীর মেয়ে শাহপরীর নামেই দ্বীপের নামকরণ হয়েছে বলেও অনেকে বলেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ:
টেকনাফ থেকে প্রায় ৮ মাইল দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে প্রবাল দ্বীপটি অবস্থিত। জিঞ্জিরা, দক্ষিণ পাড়া, গলাছিরা ও চেরাদিয়া এই চারটি দ্বীপ নিয়ে ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ’ গঠিত। এর প্রাচীন নাম নারিকেল জিনঞ্জিরা, পরবর্তীতে বৃটিশ আমলে এ দ্বীপকে সেন্টমার্টিন নাম করণ করা হয়। ভূ-তাত্ত্বিকগনের মতে দ্বীপটির বয়স ২০ লক্ষ বছর। এদ্বীপের মূল আকর্ষন সামুদ্রিক কাঁকড়া, কাছিম, প্রবাল, মুক্তা আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক এ্যাকুরিয়াম। অনেকের মতে এখানে জীবন্ত পাথরও রয়েছে। অপনার চিরকাঙ্খিত প্রবাল দ্বীপ এবং ছেঁড়াদিয়ার নির্জনতা আপনাকে বিমোহিত করবেই।
আদিনাথ:
‘আদিনাথ মন্দিরটি’ উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় পীঠস্থান। মন্দিরটি সমুদ্রের পৃষ্ট হতে ২৮৮ ফুট উপরে পাহাড়ের চুঁড়ায় অবস্থিত। প্রতি বছর শিবচতুর্দ্দশী মেলায় দেশ-বিদেশী হাজার হাজার লোক এখানে সমবেত হয়।
‘মা’ অষ্টভূজা:
মহেশখালী আদিনাথশিব মন্দিরের পার্শ্বে ‘অষ্টভূজা’ নামে অপর একটি বিগ্রের মূর্তি রয়েছে।
কক্সবাজার কস্তুরাঘাট হতে নৌযানে ৪৫-৫৫ মিনিট আর স্পীডবোটে ১৫-১৮ মিনিট সময় লাগে। মহেশখালীর গোরকঘাটা জেটি হতে রিক্সা যোগে আদিনাথ মন্দির যাওয়া যায়।
বৌদ্ধ ক্যাং:
গোরকঘাটা জেটি হয়ে বাজারে প্রবেশ করার পথে রাস্তার বাম পার্শ্বেই মহেশখালী বড় ক্যাং টি চোখে পড়বে। ক্যাং-এ ধ্যানমগ্ন পিতলের বিরাট বৌদ্ধ মূর্তি নজরে পড়বেই। বড় ক্যাং- এর ভিতরে পৃথক কয়েকটি বৌদ্ধ বিহারেও অসংখ্য পিতলের বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে এর মধ্যে মাথায় হাত দিয়ে শায়িত এবং দাঁড়ানো বৌদ্ধ মূর্তি দু’টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ও দর্শনীয়।
সোনাদিয়া দ্বীপ:
মহেশখালীর দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত সোনাদিয়া একটি ছোট্ট বালির দ্বীপ। কক্সবাজার সদর হতে এর দূরত্ব ৪ মাইল। ঐতিহাসিকগণ এটিকে সোনালী দ্বীপ বলেছেন। প্রতি বছর শীতের মওসুমেএখানে হাজার হাজার অতিথি পাখির ভিড় জমে, তাই এটিকে অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্যও বলে। এ দ্বীপ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার টন শুটকি রপ্তানী হয়। প্রকৃতির সাজানো প্যারাবনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে বেড়িয়ে আসুন সমুদ্র বক্ষে পাড়িজমানোর নির্মল আনন্দে। এ দ্বীপে কস্তুরাঘাট বা মহেশখালীর গোরকঘাটা হতে কোন যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করে না। যেতে হলে ইঞ্জিন চালিত নৌযান বা স্পীডবোট ভাড়ায় নিয়ে যেতে হবে। নৌযানে ৪৫-৫০ মি: ও স্পীড বোটে ২০-৩০ মি: সময় লাগে।
কুতুবদিয়া বাতিঘর:
কুতুবদিয়া বাতিঘরের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কিন্তু পুরাতন বাতিঘর এখন আর নেই। স্বাধীনতার পর পর সাগরের ক্রমাগত ভাঙ্গনের ফলে সে পুরাতন বাতিঘরটি সাগর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এখন একটি বাতিঘর কুতুবদিয়ায় নির্মান করা হয়েছে যা আগের বাতিঘরের মতো নয়। এটি দক্ষিণ ধুরুং-এ অবস্থিত। কুতুবদিয়াতে সাগর পাড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বায়কূল স্থাপন করা হয়েছে যা থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জনগনের চাহিদা মেটানো হচ্ছে।
মালেক শাহের দরবার শরীফ:
শাহ্ আবদুল মালেক মহিউদ্দিন আল্-কুতুবী (রহ)এক অধ্যাত্মিক সাধক। তাঁর দরবার শরীফ কুতুবদিয়া’র দক্ষিণ ধুরুং-এ অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন অসংখ্য নর-নারী তাঁর আস্তানায় আসেন। নৌ-পথে মালেক শাহ্ হুজুরের সমাধি বা মাজারে যেতে মালেক শাহের ঘাটে নেমে অনায়াসে দরবার শরীফে যেতে পারেন। অন্যদিকে কুতুবদিয়ার বড়ঘোপঘাটে নেমে রিক্সায় থানা সদরে এসে জীব বা রিক্সায় তাঁর সমাধি বা মাজারে যেতে পারেন। বড়ঘোপ থেকে দরবার শরীফের দূরত্ব আনুমানিক ৮ কি:মি:।

‘চাটগাঁ ভাষার চর্চা ও সংরক্ষণ


চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা চাটগাঁবাসীর মায়ের ভাষা। এ ভাষা আজ বিলুপ্তির পথে। এর জন্য আমরা চাটগাঁবাসীই দায়ি। বাংলাদেশ একাধিক আঞ্চলিক ভাষার দেশ। বিভাগ জেলা ও অঞ্চল ভিত্তিক রয়েছে অনেক আঞ্চলিক ভাষার প্রকারভেদ। চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষার বৈশিষ্ট্য ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিই আলাদা। এ ভাষায় ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। আরবিফার্সিবাংলাবৌদ্ধ মঘীআরকানী ইত্যাদি ভাষার সংমিশ্রণে চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষার উচ্চারণ ও কথোপকথন আবাহ্‌ সৃষ্টির মাধ্যমে আন্তরিকতার বহি:প্রকাশ ও সুন্দর সাবলীল বাচন ভঙ্গী ফুটে উঠে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এ ভাষা গেঁয়ো ভাষা বলে বিবেচিত হচ্ছে এবং আমরাও আমাদের সন্তানদের কোন অবস্থায় চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষার কথা বলতে উৎসাহ দিচ্ছি না। কোন কারণে শিশুদের মুখ থেকে আঞ্চলিক শব্দ বের হলে তাকে শোধরীরে দেয়া হচ্ছে। অথচ অনেক বিদেশিদের কাছে এ ভাষার যথেষ্ট কদর রয়েছে এবং অনেকে তা রপ্ত করতে চেষ্টা করে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় চাটগাঁবাসী আঞ্চলিক ভাষার ঐতিহ্য মুছে ফেলার কৌশল অবলম্বন করছে। ক্রমে চাটগাঁ ভাষার স্মৃতি স্বরূপ সংলক্ষণাগারে স্থান পাবে। আজ গ্রামে-গঞ্চে ও মায়েরা শিশুদের আঞ্চলিক ভাষায় বুলি ফোটায় নাশহরে তো প্রশ্নই আসে না। আঞ্চলিক ভাষায় কথা বললে তা কেমন জানি বেমানান ও বেখাপ্পা লাগে। আধুনিক সাজতে গিয়ে আমরা এ ভাষাকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষার চর্চা বিষয়ক পাঠ্য রাখা কর্তব্য। অনাভ্যাসে পৃথিবীর অনেক ভাষাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষার কথা গান কবিতা নাটক কৌতুক ভিন দেশি ভিন ভাষীদের কাছে জনপ্রিয় তেমনি এ দেশেও রয়েছে বিপুল চাহিদা। চাটগাঁবাসীর এমন এক বৈশিষ্ট্য রয়েছে পৃথিবীর যেকোন ভাষা এরা সহজে আয়ত্ব করতে পারে। কিন্তু চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষা অন্য দেশ বা জেলার মানুষ সহজে শিখতে পারে না। পৃথিবীর অনেক দেশে অনেক অঞ্চলে অধিবাসীরা নিজ মাতৃভাষায় বা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে ইহা তাদের জন্য গর্ব বা গৌরবের। অন্যকে সন্তুষ্ট করতে নিজের ভাষাকে পরিবর্তন করার মানসিকতা আত্মমর্যাদা বর্জিত। সম্প্রতি চাটগাঁ ভাষা পরিষদের উদ্যোগে চাটগাঁ ভাষার উন্নয়ন সংরক্ষণ ও স্বীকৃতি বিষয়ক যে সেমিনার করা হয়েছে এর মাধ্যমে চাটগাঁ ভাষার ব্যাপক ব্যবহার ও প্রচলনের প্রসার ঘটাতে হবে এবং এ বিষয়ে চাটগাঁবাসীর মানসিকতা পরিবর্তন করে তাদেরকেই ভূমিকা রাখতে হবে।

চাটগাঁ তথ্য বাতায়ন


দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এ জেলাটি নদী, সাগর ও পাহাড় ঘেরা। এই জেলায় দেশের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর অবস্থিত। ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১০ টি পৌরসভা ও ১৪ টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এ জেলায় প্রায় ৭০ লক্ষ অধিবাসীর জন্য সরকারের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী দপ্তর/প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান

আয়তন
:
৫২৮৩ বর্গ কি:মি:

অবস্থান
:
উত্তরে ফেনী জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা, পূর্বে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা এবং পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর
প্রশাসনিক বিবরণ


(ক)
সিটি কর্পোরেশন
:
১টি (চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন)
(খ)
উপজেলা
:
১৪টি (মীরসরাই, সীতাকুন্ড, সন্দ্বীপ, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া)।
(গ)
থানা
:
১৫টি
(ঘ)
মেট্টোপলিটন থানা
:
১২টি
(ঙ)
সংসদ নির্বাচনী এলাকা
:
১৬টি
(চ)
পৌরসভা
:
১০টি
(ছ)
ইউনিয়ন
:
১৯৫টি
(জ)
গ্রাম
:
১৩২৯টি
(ঝ)
মৌজা
:
১০৭৬টি
লোকসংখ্যা সংক্রান্ত


(ক)
লোকসংখ্যা
:
৬৯,৪১,২৭৮ জন (পুরুষ ৫৩%, মহিলা ৪৭%)
(খ)
লোকসংখ্যা (চট্টগ্রাম মহানগর)
:
৩২,০২,৭১০ জন
(গ)
লোকসংখ্যার ঘনত্ব
:
১২২০ জন প্রতি বর্গ কি:মি:
জমি সংক্রান্ত


(ক)
মোট জমির পরিমাণ
:
১,২৩,০৫,৪৪৬ একর
(খ)
আবাদী জমির পরিমাণ
:
৫,৮৮,০৭৯ একর
(গ)
অকৃষি জমির পরিমাণ
:
১,১২,৩১৪.৫৭ একর
(ঘ)
পাহাড়ী জমির পরিমাণ
:
৩,৭৩,৯৩০ একর
(ঙ)
কৃষি খাস জমির পরিমাণ
:
৪৪,৩৫০.৫৩৫ একর
নদী
:
৩টি (কর্ণফুলী, হালদা, সাঙ্গু)
শিক্ষা সংক্রান্ত


শিক্ষিতের হার
:
৫৪% (পুরুষ ৬৩%, মহিলা ৪৫%)
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা
:

(ক)
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
:
১৬৩৪ টি
(খ)
রেজিঃ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
:
৩১৮ টি
(গ)
নন রেজিঃ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
:
৩০ টি
(ঘ)
মাধ্যমিক সরকারী বিদ্যালয়
:
১৩ টি
(ঙ)
স্কুল এন্ড কলেজ (স্কুল সেকশান)
:
২৯ টি
(চ)
বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
:
৬৩২ টি
(ছ)
বেসরকারী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়
:
৩২ টি
(জ)
মোট কলেজ

১২৩ টি
(ঝ)
মোট মাদ্রাসা

৩২১ টি
(ঞ)
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

০২ টি
(ট)
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়

০৪ টি
(ঠ)
মেডিকেল কলেজ

০২ টি
(ড)
আইন কলেজ

০১ টি
জেলায় কর্মরত এনজিও
:
১১৪ টি
সমবায় সমিতি
:
৪৯৮৫ টি
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত


(ক)
হাসপাতাল
:
১৫ টি
(খ)
থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
:
১৪ টি
(গ)
পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র
:
২৩ টি
শিল্প প্রতিষ্টান সংক্রান্ত


(ক)
ভারী শিল্প
:
৩২৮ টি
(খ)
ক্ষুদ্র শিল্প
:
৪৩২৩ টি
(গ)
উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান
:
জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প (সীতাকুন্ড), ইস্টার্ণ রিফাইনারী, কাফকো, সিইউএফএল, টিএইচপি কমপ্লেক্স, পাহাড়তলী রেলওয়ে ওয়ার্কশপ, যমুনা অয়েল, পিএইচ পি ফ্লোট গ্লাস, ইউনিলিভার, গ্লাক্সো, ইত্যাদি।
(ঘ)
পাটকল
:
০৮ টি (০২ টি লে-অফ ঘোষিত)

পাটকলে শ্রমিক সংখ্যা
:
১০,৬৯৪ জন
(ঙ)
সরকারী বস্ত্রকল
:
০৫ টি
(চ)
সিমেন্ট ফ্যাক্টরী
:
০৯ টি
(ছ)
গামেন্টস ফ্যাক্টরী
:
৬৪৭ টি
(জ)
ইপিজেড
:
০২ টি
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র
:
০১ টি
উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান/স্থাপনা
:
বিটিভি (চট্টগ্রাম কেন্দ্র), বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী (বিএমএ), মেরিন একাডেমী, এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাব, চট্টগ্রাম ক্লাব, ইত্যাদি।
দর্শনীয় স্থান
:
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, হযরত শাহ আমানত (রঃ) ও হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রঃ) এর মাজার, নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর, ওয়ার সিমেট্রি, বাটালী হিল, চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড), বাঁশখালী ইকোপার্ক, পার্কি সী বীচ (আনোয়ারা), ইত্যাদি